নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর সদরের বাউলিয়া গ্রামের গৃহবধূকে ভারতে পাচারের মামলায় মা ও দুই ছেলেকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় একজনের অব্যাহতির চাওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জয়ন্ত সরকার।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো, যশোর সদরের নরসিংহকাটি গ্রামের মিন্টু হোসেনের স্ত্রী শাহনাজ খাতুন এবং তার দুই ছেলে মাসুদ হোসেন ও রানা হোসেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, আসামিরা তাদের পূর্ব পরিচিত, দুর সম্পর্কের আত্মীয় এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা। আসামি শাহনাজ বেগম এসে গৃহবধূকে ভাল চিকিৎসার করার জন্য ভারতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। প্রথমে রাজি না হলেও পরে তারা রাজি হন। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি আসামিরা গৃহবধূর বাড়িতে এসে তাকে চিকিৎসার জন্য ভারতের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। ওই দিন বিকেলে আসামিরা সকলে আবার বাড়িতে ফিরে আসে। গৃহবধূর কথা জানতে চাইলে তার স্বজনদের জানানো হয়, চিকিৎসার জন্য ভারতে পাঠানো হয়েছে, ২০/২৫ দিন পর ফিরে আসবে। ২৫ দিন পার হলেও স্বজনরা তার সাথে কোন যোগাযোগ করতে না পেরে আসামিদের বাড়িতে গিয়ে তার কথা জানতে চান। আসামিরা কোন কিছু না বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে গৃহবধূ ভারত থেকে তার স্বামীর মোবাইলে ফোন করে তাকে পাচারের বিষয় এবং পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়ার বিষয়টি জানায়। পাচার হওয়া গৃহবধূকে উদ্ধারের কথা বললে আসামিরা অশ্লীল ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। গৃহবধূকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে তার স্বামী ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করেন। আদালতের আদেশে অভিযোগটি ১৫ মার্চ কোতয়ালি থানায় রুজু হয়। মামলার তদন্ত কালে গৃহবধূ ভারত থেকে দেশে ফিরে আসে এবং আদালতে জবানবন্দি দেয়। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় চার্জশিটে আসামি মিন্টু হোসেনর অব্যাহতি চাওয়া হয়েছে। চার্জশিটে অভিযুক্ত শাহানাজ খাতুন ও তার ছেলে মাসুদ হোসেনকে পলাতক দেখানো হয়েছে।