Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪০ হাজার ৮শ হেক্টর

যশোরে আমন মৌসুমের শুরুতে চাহিদার তুলনায় সারের বরাদ্দ প্রায় অর্ধেক

এখন সময়: শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর , ২০২৫, ১০:২৯:৫৯ এম

আবদুল কাদের : যশোরে আমন মৌসুমে শুরুতে সারের বরাদ্দ কম রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) উৎপাদিত টিএসপি সার মিলছে না প্রয়োজনমতো। ডিএপি ও এমওপি সারেরও সংকট দেখা দিয়েছে। ডিলারদের কাছে বিঘাপ্রতি ১০ কেজির বেশি সার পাচ্ছেন না কৃষক। তাও কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। এতে করে আমন উৎপাদন ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার ৮শ হেক্টর। ইতিমধ্যে আবাদ সমপন্ন হয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার ৬৫১ হেক্টর।
গত তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে ৪৭ হাজার ২২৩ মেট্রিক টন। বিপরীতে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ২৫ হাজার ১৪৪ মেট্রিক টন। টিএসপি সারের চাহিদা রয়েছে ১৩ হাজার ৮৪৩ মেট্রিক টন, বরাদ্দ পাওয়া গেছে, ৪ হাজার ৮৬৪ মেট্রিক টন। ডিএপি সারের চাহিদা রয়েছে ১৬ হাজার ৫৩১ মেট্রিক টন। বরাদ্দ মিলেছে ৯ হাজার ৮৮২ মেট্রিক টন। এবং এমওপি সারের চাহিদা রয়েছে ২৩ হাজার ২৪৭ মেট্রিক টন। বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৬ হাাজর ৯৮০ মেট্রিক টন।
গত মাসে ইউরিয়া সার উত্তোলন করা হয়েছে ১৭ হাজার ৯৮৯ মেট্রিক টন। মজুদ রয়েছে ৩ হাজার ৩৬২ মেট্রিক টন। টিএসপি উত্তোলন করা হয়েছে ৩ হাজার ৫৫৬ মেট্রিক টন, মজুদ রয়েছে ৪৫২ মেট্রিক টন। ডিএপি উত্তোলন করা হয়েছে ৬ হাজার ৮৬৮ মেট্রিক টন, মজুদ রয়েছে ৭৫৮ মেট্রিক টন। এবং এমওপি সার উত্তোলন করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৯৫ মেট্রিক টন। এই সারের বর্তমান মজুদ রয়েছে ৯৫১ মেট্রি টন।
কৃত্রিম সংকটের কারণে সারের দাম কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়েছে। কোথাও কোথাও বস্তাপ্রতি ১০০-১৫০ টাকা বেশি দামে সার বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিলাররা বলছেন, তারা যে পরিমাণ সার বরাদ্দ পান সেটি স্থানীয় কৃষকদের চাহিদার তুলনায় খুবই কম। আমনের সময় চাহিদা বেশি হওয়ায় সংকট আরো বেড়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) সারা দেশে সারের ডিলারশিপের অনুমতি দেয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিএডিসি নন-ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সার সরবরাহ করে। বিএডিসির পাশাপাশি নন-ইউরিয়া সার আসে বেসরকারি আমদানিকারকের মাধ্যমেও। আর বিসিআইসি স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানির মাধ্যমে ইউরিয়ার জোগান দেয়।
সরকার নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, ইউরিয়া ও টিএসপি সার কৃষক পর্যায়ে প্রতি কেজি ২৭ টাকা, এমওপি ২০ ও ডিএপি সার প্রতি কেজি ২১ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। অন্যদিকে, জমির উর্বরতা, মাটির ধরন ও ফসলের জাতের ওপর নির্ভর করে প্রতি একর জমিতে ইউরিয়া প্রায় ১৩০-১৪০ কেজি, টিএসপি ৫০-৬০ ও এমওপি ৪০-৫০ কেজি প্রয়োজন হতে পারে।
যশোরের খুচরা বাজারে সরকার র্নির্ধারিত দামে সার বিক্রি হচ্ছে না বলে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। সদর উপজেলার চান্দুটিয়া গ্রামের কৃষক শফিয়ার রহমান জানান, তারা ইউরিয়া সার ২৮ টাকা, টিএসপি ৪০ টাকা এমওপি ২৪ টাকা এবং ডিএপি সার কিরেছেন ২৬ টাকা কেজি দরে। ওই বাজারের একজন খুচরা সার বিক্রেতা জানান, তারা ডিলারদের কাছ থেকে বেশি দামে কেনার কারণে সরকার নির্ধারিত দামে সার বিক্রি করা সম্ভব হয় না। মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা এলাকার কৃষক রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি আড়াই বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছেন। ইউরিয়া সার কিনেছন ২৮ টাকা কেজি, টিএসপি ৪০ টাকা কেজিতে। তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে আমাদের মতো কৃষকরা সার কিনতে পারেনা। সরকার নির্ধারিত দামে সার কিনতে পারলে কৃষকদের জন্য উপকার হতো।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের উপপরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, যশোরে সারের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কিছুটা কম রয়েছে। তবে সারের কোন সংকট নেই। যেটুকু কম রয়েছে তা চাওয়া মাত্র সরকারের কাছ থেকে পাওয়া যাবে। বাজারে বেশি দামে যাতে সার বিক্রি না হয় সেজন্য আমাদের মনিটরিং কমিটি রয়েছে। তারা কাজ করছেন।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) যশোরের উপমহাব্যবস্থঅপক আক্তারুল ইসলাম জানান, যশোরে তাদের মোট ডিলার রয়েছে ১৪১ জন। সেপ্টেম্বর মাসে বরাদ্দ আছে ৬ হাজার ৯২৩ মেট্রিক টন। যার মধ্যে সদর উপজেলায় বরাদ্দ পাওয়া গেছে, এক হাজার ৬২১ মেট্রিক টন। তিনি বলেন, যশোরে সারের কোন সংকট নেই। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত সার বরাদ্দ রয়েছে।
এব্যাপারে যশোরের জেলা প্রশাসক মো: আজাহারুল ইসলাম জানান, এখন আমন আবাদ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এসময় সারের ব্যবহার কম হয়ে থাকে। ডিলারদের বেশি দামে সার বিক্রির সুযোগ নেই। আমাদের মনিটরিং টিম প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নিচ্ছে। গ্রামের কিছু প্রান্তিক পর্যায়ের দোকানদাররা বেশি দামে সার বিক্রি করতে পারে। তবে যশোরে কোন সারের সংকট নেই।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)