শাহীন আলম তুহিন,মাগুরা : পৌষের শুরুতে মাগুরা জেলার ৪ উপজেলায় কৃষকরা আগাম পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তীব্র শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকেই পেঁয়াজের চারা নিয়ে মাঠে মাঠে রোপণ করছেন তারা। সরেজমিন শ্রীপুর উপজেলার নাকোল গ্রামের কদমতলা উত্তর গোবিনপুর মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকেই কৃষকরা পেঁয়াজের চারা হাতে নিয়ে জমিতে রোপণ করছেন। সারিবদ্ধভাবে প্রতিটি লাইনে পেঁয়াজের চারা গাছ রোপণ করা হচ্ছে।
নাকোল গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন- একমাস আগে পেঁয়াজের চারার বীজ রোপণ করেছিলাম। এক মাসের মধ্যে চারা গজানোর পরপর তা উত্তোলন করে জমিতে রোপণ করতে হয়। পৌষের শুরুতে আমি ২০ বিঘা জমিতে আগাম পেঁয়াজের চারা রোপন করছি। এ ২০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপন করতে আমি ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক নিয়োগ করেছি। প্রতিদিন এক এক জন শ্রমিক বাবদ ৫শ টাকা থেকে ৬শ খরচ হচ্ছে। এবার ২০ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে উৎপাদন খরচ হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে। এবার বাম্পার ফলন হলে এ চাষে ৩০ লাখ টাকা আমার আয় হবে। আগামী চৈত্র মাসের শুরুতে এই পেঁয়াজ উঠতে শুরু করবে।
কদমতলা উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামের চাষী ইকরাম মোল্লা জানান- এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পেঁয়াজের আবাদ ভালো হবে বলে আশা করছি। তীব্র শীতের মধ্যে আমরা পেঁয়াজের চারা রোপন করছি। এবার ১৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করছি। চলতি বছর এ চাষে আমি ৬-৭ লক্ষ টাকা আয় করবো বলে মনে করছি। আর এই চাষে আমার ৪ লক্ষ খরচ হচ্ছে। পেয়াজের চারা রোপনের আগে জমি প্রস্তুত করতে হয়। চারা গাছ রোপনের পরপর জমিতে নিয়মিত সার ও সেচ দিতে হবে। পেঁয়াজের চারা একমাস পর বড় হলে জমিতে পরিচর্যা বাড়াতে হবে। অতিরিক্ত ঘন কুয়াশার কারণে পেঁয়াজের চারা অনেক সময় বাড়তে বাধাগ্রস্ত হয়। চারা গাছের বেশি ক্ষতি হলে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিতে হবে। এবার আমি লালতীর,সুখসাগর জাতের পেয়াজের বীজ রোপন করেছি। আশা করছি আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূলে থাকলে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন- এবার শীত মৌসুমে মাগুরার ৪ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আগাম পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এবার আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূল থাকলে মাগুরায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি। চলতি বছর জেলায় ৮৫৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে সদরে ১৪০ হেক্টর,শ্রীপুরে ৪৫০ হেক্টর,শালিখায় ২০৫ হেক্টর ও মহম্মদপুরে ১৬৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। এ চাষে আমরা কৃষকদের পরামর্শ ও উদ্বুদ্ধ করছি। এ বছর আমরা বিনামূল্যে প্রান্তিক পেঁয়াজ চাষীদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করেছি।