ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ১৬ বছর বয়সে রেহেনা বেগম ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় এসে নিখোঁজ হন, তখন সাল ছিল ১৯৮৬। এরপর থেকে তিনি পাকিস্তানের পাঞ্জাবে আছেন। তবে তার পাকিস্তান যাওয়ার কোনো তথ্য জানা যায়নি। বর্তমানে তার বয়স ৫৫, তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জননী।
দীর্ঘ ৩৯ বছর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বজনদের খোঁজ পান রেহেনা বেগম। তাকে ফিরে আনতে সরকারি সহায়তা চেয়েছে পরিবার। তিনি কোটচাঁদপুর উপজেলার কাগমারী গ্রামের মৃত মোস্তফা আলীর মেয়ে।
রেহেনা বেগমের ভাগনে রনি ইসলাম বলেন, ছয় ভাইবোনের মধ্যে রেহেনা খাতুন ছিলেন পাঁচ নম্বর। আর ভাইদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দ আলী ও অহিদ আলী। বোন মরিয়ম বেগম, আয়েশা বেগম ও ফিরোজা বেগম।
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৮৬ সালের দিকে ১৬ বছর বয়সে আমার খালা ঢাকা থেকে হারিয়ে যান। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেছিল পরিবার থেকে। সে সময় তার কোনো খোঁজ মেলেনি।’ সেই থেকে খালা পাকিস্তানের পাঞ্জাবে আছেন। আমার খালার দেবর পাকিস্তান থেকে তাবলিগ জামায়াতে এসেছেন যশোরে। সেখানে পরিচয় হয় যশোরের ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেকের সঙ্গে। তিনিও দেশে দেশে তাবলিগ জামায়াত করেন। ওনার কাছে খালার লেখা খুদেবার্তাটি দেন তার দেবর। এরপর তিনি কোটচাঁদপুরের জনৈক ব্যক্তির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) সেই খুদেবার্তাটি পোস্ট করেন। সেই সূত্র ধরে ৩৯ বছর পর আমরা খালাকে ফিরে পেয়েছি। আর খালা ফিরে পেয়েছেন তার পরিবার ও স্বজনদের।’
রনি ইসলাম বলেন, ‘২-৩ দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি পোস্ট আমার সামনে আসে। যে পোস্টে উল্লেখ ছিল আমার মামা, খালা ও দাদার নাম। তবে ঠিকানা লেখা ছিল শুধু কোটচাঁদপুর। এরপর ওই পোস্টের সূত্র ধরে মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে সবকিছুর সন্ধান করা হয়েছে। এরপর সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে আমার খালা পরিবারের সবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছেন।’
এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবার ও স্বজনেরা। খালা (রেহেনা) ও তার পরিবারের সবাই দেশে ফিরতে চান। তারা বাংলাদেশ সরকারের সহায়তাও চেয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমাদের তেমন কিছু করার নাই। দেশে ফিরিয়ে আনতে হলে তার স্বজনদের পাকিস্তানের দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে। দূতাবাস থেকে যদি কোনো তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য বলে, সে ক্ষেত্রে আমরা যাচাই-বাছাই করে সহায়তা করতে পারি।’