ক্রীড়া প্রতিবেদক: কাজী ইনাম আহমেদকে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য করার প্রতিবাদে এবং অপসারণের দাবিতে জেলা সর্বস্তরের ক্রীড়া সংগঠক ও খেলোয়াড়রা এক হয়েছেন। মঙ্গলবার প্রতিবাদ সরুপ জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের কাছে স্মারকলিপি দেন নেতৃবৃন্দ। এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করায় আমরা তীব্র প্রতিবাদ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছি এবং অনতিবিলম্বে তাকে এডহক কমিটির থেকে অপসারণ কবার জোর দাবি জানাচ্ছি। এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন প্রতিবাদকারীরা। এসময় সাবেক ক্রিকেটার মাহতাব নাসির পলাশ বলেন, ইনাম আহমেদকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। তাকে প্রত্যাহার করা না হলে, জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম বন্ধ করার হুশিয়ারি দেন তিনি। একই দাবিতে আজ বুধবার বেলা ১২ টায় যশোর শামস্-উল-হুদা স্টেডিয়ামের আমেনা খাতুন ক্রিকেট গ্যালারির নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ দুই নির্বাচনে কাজী ইনাম আহমেদ যশোরের প্রতিনিধি হয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার পর যশোরের ক্রীড়া সংগঠকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগদান ছাড়া স্থানীয় খেলাধুলার ব্যাপারে কোনো খোঁজখবর রাখেননি। যশোরের ক্রীড়াঙ্গনে তার কোনো অবদানই নেই। সাবেক ক্রিকেটর মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু বলেন, যাদের হাত ধরে যশোরের ক্রীড়াঙ্গণ ধ্বংস হয়েছে, তাদেরকে ফিরিয়ে এনে খুব অন্যায় করা হয়েছে। আমরা যশোরবাসী এ সিদ্ধান্ত ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। অবিলম্বে কাজী ইনাম আহমেদকে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটি থেকে বাদ দিতে হবে। অন্যথায় আমরা যশোরবাসী বৃহৎ আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে বাদ দিতে বাধ্য করব। যশোরের জেলা প্রশাসক এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির আহ্বায়ক আজাহারুল ইসলাম বলেন, কীভাবে কোন মাধ্যমে কাজী এনামকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সে বিষয় বিন্দুমাত্র আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো।
এদিকে, সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক কাজী নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে যশোর জেলা ক্রীড়া সংস্থার ৯ সদস্যের নতুন এডহক কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। পদাধিকারবলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া অফিসারকে সদস্যসচিব রেখে কমিটির সদস্য করা হয়েছে মোহাম্মদ শফিকউজ্জামান, এজেডএম সালেক, কাজী ইনাম আহমেদ, এস এম আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুহম্মদ বুরহান উদ্দিন, সামিউল আলম শিমুল ও মাসুদ রানা বাবুকে। এডহক কমিটি গঠনের আট মাস পর ক্রীড়া সংগঠক নিবাস হালদারের স্থলে বিসিবির সাবেক পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নতুন কমিটি জানাজানি হওয়ার পর কমিটি থেকে তার নাম বাদ দেওয়ার দাবি ওঠে। যশোরের খেলাধুলার সাথে কখনও সম্পৃক্ত ছিলেন না কাজী ইনাম আহমেদ। তাকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যশোরের ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকরা। আসন্ন বিসিবি নির্বাচনে ভোটার হওয়ার সুযোগ নিতেই ইনাম আহমেদ এডহক কমিটির পদ বাগিয়ে নিয়েছেন বলে তাদের অভিযোগ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সর্বশেষ নীতিমালা অনুযায়ী, জেলা ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটির সদস্য ছাড়া কেউ বিসিবি’র প্রতিনিধি হতে পারবেন না।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক ক্রিকেটার মাহতাব নাসির পলাশ, সোনালী অতীত ক্লাব যশোরের সভাপতি এ বি এম আখতারুজ্জামান, সাবেক জাতীয় ফুটবলার সৈয়দ মাশুক মুহম্মদ সাথী, সাবেক ক্রিকেটার মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, সোহেল মাসুদ হাসান টিটো, সোহেল আল মামুন নিসাদ, মোস্তাক নাসির টনি, খান মোহাম্মদ শফিক রতন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সহসভাপতি মির্জা আখিরুজ্জামান সান্টু, ক্রীড়া সংগঠক হিমাদ্রী সাহা মনি, শহিদ হোসেন লাল বাবু প্রমুখ।