শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : শিক্ষা উপদেষ্টার ঘোষণার আলোকে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫শ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসবভাতা প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে বেনাপোলে মানববন্ধন করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বেনাপোল বাজারের প্রাণকেন্দ্রে রহমান চেম্বারের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশগ্রহণ করেন। একইসঙ্গে শিক্ষকদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেয়।
ধান্যখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাহেব আলী বলেন, আমাদের দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। বর্তমান বেতনে সংসার চালানো কঠিন। চিকিৎসা, সন্তানদের শিক্ষা, ঘরভাড়া-সব মিলিয়ে দুঃসহ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তাই আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব।
শিক্ষকদের মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরাও পাশে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে। মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শেখ কণিকা বলেছে, যেদিন শিক্ষক রাস্তায় কাঁদেন, সেদিন জাতির বিবেক রক্তাক্ত হয়। আমাদের শিক্ষকরা তো ভিক্ষা চায়নি-চেয়েছে তাদের ন্যায্য অধিকার। অথচ তাদের ওপর টিয়ারসেল, লাঠিচার্জ, গ্রেফতার-এটা জাতির জন্য লজ্জার।
সে আরও বলেছে, যে শিক্ষক ১০-১২ হাজার টাকা বেতন নিয়ে চাকরি শুরু করেন এবং ২০-২২ হাজার টাকা বেতনে জীবন শেষ করেন, তিনি কেমন করে টিকে থাকবেন? চাল-মাংসের দাম আকাশচুম্বী, চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে প্রতিদিন, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগান দেওয়া-তবুও তারা ন্যায্য দাবিতে রাস্তায় নামলে তাদের ওপর হামলা হয়! রাষ্ট্র যদি শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করে, তবে সেই রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তাই, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সরকার সম্মান না জানালে সমস্ত শিক্ষার্থীরা মিলে শিক্ষকের জন্য, ভবিষ্যতের জন্য, জাতির জন্য, মুক্তচিন্তার জন্য রাজপথে নামার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে সে।
শার্শা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শাহাজাহান কবীর বলেন, গত সোমবার থেকে উপজেলার ৩৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩৬টি মাদ্রাসার শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন। সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে।
মানববন্ধনে বক্তারা শিক্ষকদের দাবির প্রতি সরকারের দ্রুত সাড়া দেওয়ার আহ্বান জানান।