সুব্রত কুমার ফৌজদার, ডুমুরিয়া : ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ শনিবার মধ্যরাতে ডুমুরিয়ার ৬৫টি ফিশিংবোট বহরে সমুদ্রে ছুটবে জেলেরা। রবিবার সূর্যোদয়ের আগেই পৌঁছে যাবে দুবলার চরে। সেখান থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যাবেন তারা। ৬ মাসের খাদ্য সামগ্রীসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি নিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন আরো ৩দিন আগে। গত কয়েকদিন ধরে সুন্দরবন সংলগ্ন বনবিভাগের বিভিন্ন চেকপোস্ট এলাকায় অবস্থান করছেন শতশত জেলেরা।
জানা যায়, আগামী ২৬ অক্টোবর থেকে দুবলার চরে শুটকি মৌসুমকে ঘিরে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাত্রা শুরু করেছে জেলেরা। ঝড়-জলোচ্ছ্বাস উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ আহরণ করবে। এবার খুলনার ডুমুরিয়া থেকে ৬৫টি ফিশিং ট্রলার বহরে সমুদ্রে যাচ্ছে ৬৬৫জন জেলে। এ এলাকার অধিকাংশ জেলে মোংলা হয়ে সমুদ্রে যাত্রা করছেন। অনেকে কয়েকদিন আগেই সুন্দরবন সংলগ্ন বনবিভাগ চাদপাই রেঞ্জ এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। ইলিশ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ শনিবার মধ্যরাতেই সমুদ্রে ছুটবেন তারা। দুবলার চর, আলোরকোল, মাঝের চর, শ্যালার চর ও নারিকেলবাড়ীয়া চরে জেলেদের অবস্থান নির্ধারণ করেছে বনবিভাগ। সাগরে একদিকে জলদস্যুদের উৎপাত অন্যদিকে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, উভয় অতিক্রম করেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে হয় জেলেদের।
গোনালী গ্রামের শ্যামল বিশ্বাস ও আশুতোষ বিশ্বাস জানান, ১০ জন জেলে নিয়ে খর্ণিয়া থেকে তাদের ট্রলার ছেড়েছেন দু’দিন আগে। ৬ মাসের চাল-ডাল, বিভিন্ন খাদ্র সামগ্রী, জাল, দড়িসহ মাছ ধরার উপকরণ ও অন্যান্য আসবাবপত্র নিয়ে রওনা দিয়েছেন জেলেরা। খর্ণিয়া, কাঠালতলা, চুকনগর, বরাতিয়া, কুলবাড়িয়া, আইতলা, শরাফপুর, তৈয়েবপুর, কাঞ্চননগর, তেলিখালীসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জেলেরা ফিশিং ট্রলার বহরে সমুদ্রে যাচ্ছেন।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোঃ জিল্লুর রহমান রিগান জানান, ডুমুরিয়ার জেলেরা সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে ২২ দিন মৎস্য আহরণ থেকে বিরত ছিলো। এবার ৬৫টি আর্টিশনাল নৌযানের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। নির্বিঘ্নে এবং কোনো ধরণের হয়রানি ছাড়া জেলেরা সমুদ্রে মাছ আহরণ করবে। এই প্রথম ডুমুরিয়া থেকে নৌযানের অনুমতিপত্র নিয়ে সমুদ্রে যাচ্ছে জেলেরা।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, সমুদ্রে মাছ আহরণে যাওয়া জেলেদের থাকার জন্য দুবলার চরে ৯০০টি ঘর, ৮০টি দোকান এবং মাছ বেচাকেনার জন্য ১০০টি ডিপো অনুমোদন দিয়েছে বনবিভাগ। এই মৌসুমে ৯ থেকে ১০ হাজার জেলে-মহাজন চরে অবস্থান করবেন।