ফুলতলা (খুলনা) প্রতিনিধি: ফুলতলার দামোদর এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে পিঠা মেলায় মেয়েদের ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় বখাটেদের ছুরিকাঘাতে এসএসসি দুই পরীক্ষার্থী গুরুতর জখম হয়েছে। তাদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় দুই বখাটে হাসিব শেখ (২০) ও বাধন মিনা (১৮) কে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উপলক্ষ্যে দামোদর এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ৩ দিনব্যাপী পিঠা মেলা শুরু হয়। রোববার দুপুর আনুমানিক ১২ টার দিকে বহিরাগত ৪ যুবক মেলার মাঠে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে বহিরাগত বখাটেরা কৌশলে তাদের স্কুলের পিছনে বাথরুমের কোনায় নিয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এতে দামোদর গ্রামের তৌহিদ আজম বুলবুলের ছেলে রউফুল কায়েস ঈশানের (১৬) পিঠে ও কোমরে এবং একই গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের পুত্র তামিম মাহমুদ তামিমের (১৭) মাথা ও কপালে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হলে তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধার করে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
অপরদিকে শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থল থেকে ফুলতলার পাড়িয়ারডাঙা গ্রামের বিল্লাল শেখের পুত্র হাসিব শেখ (২০) ধারালো চাকুসহ এবং তার সঙ্গী একই গ্রামের শাহাজাহান মিনার পুত্র বাধন মিনা ওরফে বাদল (১৮) কে ধরে গণপিটুনি দিয়েছে। তাদের সহযোগী অপর দুই যুবক পালিয়ে যায়। এ সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ হাসিব ও বাধনকে শিক্ষার্থীদের হাত থেকে রক্ষা করে অফিস কক্ষে আটকে রাখে। এলাকাবাসী প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে আটককৃতদের তাদের হাতে তুলে দেয়ার দাবিতে স্কুল গেট ভেঙে ফেলে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আটক দুই বখাটেকে থানায় নিয়ে যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল। ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়ে কোন সিসি ক্যামেরা না থাকায় বিষয়টি সবার নজর এড়িয়ে যায়।
বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক এস এম এ হালিম বলেন, আহত দুই শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। ঘটনার সময় ছুটিতে থাকায় স্কুলে ছিলাম না। তবে ঘটনাটি শুনে দ্রুত স্কুলে আসি এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খান বলেন, ঘটনায় ব্যবহৃত চাকুসহ দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরও আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।