নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের বাজারে নিত্যপণ্যের দামে নাভিশ্বাস ক্রেতাদের। অধিকাংশ সবজির দাম ৮০ টাকার ওপরে। গত সপ্তাহের তুলনায় দু-একটির দাম কমলেও বেশির ভাগেরই বেড়েছে। দাম বেড়েছে মাছ-মুরগিরও। তবে অপরিবর্তিত গরু ও খাসির মাংসের দাম। এছাড়া পেঁয়াজ-রসুনের দাম কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা বেড়েছে।
গতকাল শহরের বড় বাজারে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৬০ টাকায়, করলা ৮০-৯০, বরবটি-ঢেঁড়শ ৮০, শসা ৮০-১০০, বেগুন ৮০-১১০, টমেটো ১৪০-১৬০ ও কাঁচামরিচ ১৪০-১৬০ টাকায়। প্রতি পিস চালকুমড়া বিক্রি হয় ৭০-৮০ ও লাউ ৮০-৯০ টাকায়।
মাছ ও মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬০-১৮০ টাকা। গতকাল তা বিক্রি হয়েছে ১৭০-১৮০ টাকায়। সোনালী মুরগি ২৮০-৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। দোশ মুরগির দাম ছিল কেজিপ্রতি ৫৮০-৬৩০ টাকা।
গত সপ্তাহে রুই মাছের সর্বনিম্ন দাম ছিল ৩০০ টাকা। গতকাল তা ৩২০-৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়। তেলাপিয়ার দাম ছিল কেজিপ্রতি ২১০-২৩০ টাকা। পাবদা আকার ভেদে ৩২০-৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। চাষের কৈ ২২০-২৪০ টাকায় বিক্রি হয়।
ইলিশের দাম বাড়তির ধারায় রয়েছে। গতকাল বাজারে ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ১ হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজার টাকায়। ৯০০ গ্রামের ইলিশের দাম ছিল ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়। এছাড়া খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। গরুর মাংস বিক্রি হয় ৭৫০-৮০০ টাকায়।
আদা-রসুন ও দেশি পেঁয়াজের দামও কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। গত শুক্রবার আমদানি করা রসুনের দাম ছিল ১৩০-২০০ টাকা, গতকাল যা ১৪০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়। আমদানি করা আদা ১০ টাকা বেড়ে সর্বনিম্ন ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। দেশি রসুনের দাম ছিল ১০০-১৫০ টাকা। পেঁয়াজের দাম ৭০-৮০ টাকা কেজি।
সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় পকেটে টান পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। ফলে হিসাব করে বাজার করছেন অনেকেই। শহরের বেজপাড়ার চা-দোকানী সাদের আলী বলেন, দিন দিন সব পণ্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু আমাদের আয় বাড়ছে না। আগের চেয়ে বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে পরিবার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সেজন্য প্রয়োজনের বাইরে একটুও বাজার করি না।
এদিকে, চালের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল। গতকাল পাইকারি বাজারে মিনিকেট কেজিপ্রতি ৭০-৭৬ ও মোজাম্মেল স্পেশাল মিনিকেট ৮০-৮২ টাকায় বিক্রি হয়। আটাশ চালের দাম ছিল ৫৬-৬০ টাকা। স্বর্ণা ও গুঁটি (মোটা) ৫২-৫৪ টাকা, দেশী নাজিরশাইল ৭৮-৮০, ভারতীয় নাজিরশাইল ৭২ ও লোকাল কাটারিভোগ ৮০-৮২, সুগন্ধি কাটারিভোগ ১৩২-১৩৪ ও বাসমতি চাল ৮৮-৯০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় পোলাও চাল বস্তাপ্রতি বেড়েছে ২০০ টাকা। ফলে খুচরা বাজারে কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়েছে।
বড় বাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী আশিষ কুমার বলেন, ভাতের চালের দাম বাড়েনি। তবে পোলাও চালের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে আমরা প্রতি বস্তা ৫ হাজার ২০০ টাকায় কিনেছিলাম। এ সপ্তাহে ৫ হাজার ৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। লস হচ্ছে দাবি করে কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে। তবে পোলাও চালের দাম বাড়লেও মানুষের নিত্যদিনের খরচে প্রভাব তেমন পড়বে না। কারণ পোলাও মানুষের প্রতিদিন লাগে না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পাইকারি মার্কেটে চাল বিক্রি কমেছে দাবি করে বাজারের আড়তদার শফিকুল ইসলাম বলেন, আগে সাধারণ ক্রেতারা বস্তা ধরে চাল কিনত। মাসের শুরুতে প্রচুর বিক্রি হতো। গত দুই মাসে আমাদের বিক্রি কমে গেছে। এখন বস্তা ধরে না কিনে খুচরা বাজার থেকে অল্প অল্প করে চাল কিনছে মানুষ।